নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিনঃ
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার। ফলে নগরের মার্কেটগুলোতে দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। প্রখর রোদ আর করোনা ভীতিকে উপেক্ষা করে ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। মার্কেটের পাশাপাশি ফুটপাতের হকারদের অস্থায়ী দোকানেও নেমেছে ক্রেতাদের ঢল। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না অধিকাংশ ক্রেতা এবং বিক্রেতারা। বাড়ছে মরণঘাতি করোনায় সংক্রামণের শঙ্কা।
জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের সূত্রমতে, ১৭ জুলাই শনিবার গত ২৪ ঘন্টায় আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার একজন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা ও একজন সোনারগাঁও এলাকার বাসিন্দা। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ২৩৬ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৬১৭ জনের। এরমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ২০৯ জন। এতে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ হাজার ৭৬২ জন। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই ঈদ মার্কেটগুলোতে।
শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া থেকে ডিআইটি পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, ঈদের কেনাকাটায় পরিবার পরিজন নিয়ে শপিং করতে গিয়ে অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। ক্রেতারা মাস্ক পড়লেও শিশুদের মুখে নেই মাস্ক। ফুটপাতে নেই চলাচলের জায়গা। ফুটপাতে হকারদের দোকান ও অধিক ক্রেতাদের কারণে নেই পথচারীদের মাঝে নেই সামাজিক দুরুত্ব। অনেকেই ঠাসাঠাসি এড়াতে ফুটপাত ছেড়ে সড়কের যানবাহনের পাশ দিয়েই চলাচল করছে। বাড়ছে দূর্ঘটনার শঙ্কা।
ঈদের বাজার করতে আসা মো. রহমান বলেন, “শপিং করতে আসা মানে একটা বিপদ। পরিবারের ছোট বাচ্চাদের জন্য কাপড় নিতে আসলাম, কিন্তু বাজারের যা অবস্থা তাতে মাথা ঠিক থাকে না অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। এছাড়া যে ভিড় তাতে গায়ে গায়ে ধাক্কা দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। এজন্য ফুটপাত ছেড়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি।”
নিজের মুখে মাস্ক থাকলেও আলম রহমানের কোলের শিশুর মুখে মাস্ক নেই। কালিবাজার শায়েস্তা খান সড়কে হকারদের থেকে পোশাক ক্রয় করছেন তিনি। শিশুর মাস্কের কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, “আল্লায় দেখব আমাগো”। মার্কেটে ক্রেতাদের ঢল দেখে যাত্রীর অপেক্ষোয় থাকা একজন রিকশা চালক বলেন, “লকডাউন আসলেই শোনা যায়, মানুষের ঘরে খাবার নাই। কিন্তু লকডাউন খুললেই শুরু হইয়া যায় জামা কিনা”।
নবাব সিরাজউদ্দোল্লাহ সড়কের হকার বিক্রেতা মনির মিয়া ক্রেতাদের সাথে বেঁচাকেনায় ব্যস্ত। তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, “আজ সকাল থেকেই যাত্রী বেশি আছে। আমাদের ইনকাম ভালো হইতেছে। লকডাউনে অনেক কষ্ট হইছে। কোন ইনকাম ছিল না। কিন্তু এখন আল্লাহর রহমতে বেশ ভালোই চলতাছে। আবার নাকি লকডাউন দিয়ে দিবো। দেহি কয়টা টাকা আয় হইলে, লকডাউনে কোন রকমে সংসারটা যদি চালাইতে পারি!”
Leave a Reply