রবিবার, জুলাই ৪, ২০২১




রূপগঞ্জে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতায় পানিবন্দি ১ লাখ বাসিন্দা

নিজাম উদ্দিন আহমেদ, রূপগঞ্জঃ

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ১ লাখ বাসিন্দা। এতে সাধারণ মানুষের যেন ভোগান্তির অন্ত নেই। রবিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের বলাইখা, বিজয় নগর, দক্ষিণপাড়া, নাগেরবাগ, ৫ নং ক্যানেল, উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়া, তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ,
মাসাবো, তারাব, রূপসী, খাদুন, মৈকুলী, কাঞ্চন পৌরসভার কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এ পানিবন্দি চিত্র দেখা যায়। অপরিকল্পিত
ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল দখল, যত্রতত্র বালু ভরাট, অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ ও জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতা জলাবদ্ধতার মূল কারণ হিসেবে জানা যায়।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, এ ইউনিয়নের ৪ নম্বর, ৫ নম্বর ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে
রয়েছে। বর্ষার মৌসুম আসলেই এ তিনটি ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। গত ৫ বছর এ ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা এ সমস্যার সম্মূখীন হচ্ছে। এ
ইউনিয়নের গড়ে উঠা পদ্মা টেক্সটাইলসহ বেশকয়েকটি কোম্পানী এ ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের খালটি দখল করে রেখেছে। এছাড়া পানি নিষ্কাশনের জন্য মধ্যপাড়া এলাকার স্লুইচগেট কয়েকটি কোম্পানী কৃষকদের কাছ থেকে কমদামে জমি ক্রয় করতে বন্ধ করে রেখেছে বেশকয়েক বছর ধরে। এসকল কারণে সাধারণ ভোগান্তি পোহাচ্ছে বছরের পর বছর। সর্বশেষ
জলাবদ্ধতায় পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়। জলাবদ্ধতার ওই নারীর দাফনের ভোগান্তি পোহাতে হয় পরিবারের লোকজনকে। সর্বশেষ এছাড়া গত ২ জুলাই ফাহিম নামে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়। ফাহিমের বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় সে ঘর থেকে
ফ্রিজ বের করতে গিয়ে সে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।
জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া এলাকায় গুলোতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সাধারণ মানুষ কেউ হাটু পানিতে আবার কেউ কেউ গলা পানিতে নেমে চলাচল করছে। মানুষের ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। পানি প্রবেশের কারণে রান্নাবান্দা, চলাচলের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী জাকির হোসেন বলেন, আমরা পদ্মা টেক্সটাইলসহ কয়েক কোম্পানী পানি নিষ্কাশনের খাল দখল করে রাখায় রাস্তাঘাট ও ঘরের ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে। আমার প্রায় বেশকয়েকটি ঘর ভাড়া দেওয়া ছিল। সবকটি ঘরে পানি প্রবেশ করায় ভাড়াটিয়ারা চলে গেছে। একদিকে করোনা আর একদিকে জলাবদ্ধতার আমাদের মতো সাধারণ মানুষের না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। কথা হয় ভ্যান চালক মিঠুর সঙ্গে তিনি বলেন, আমাগো ঘরে পানি গেছে অহন আমরা যামু কই। করোনার লাইগা ভ্যান লইয়া বাইরে যাইতে পারি না পুলিশ দইরা মারে। আর ঘরে মইধ্যে পানি যাওনে ঘরে থাকন যায়না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান, বলেন উপজেলার কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে শুনেছি। জলাবদ্ধতার
নিরসনের ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। আশা করি শীঘ্রই জলাবদ্ধতার নিরসন হবে।

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + eighteen =

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর