শনিবার, নভেম্বর ৩০, ২০২৪




অভিযানেও নূন্যতম কমেনি পলি গডফাদারদের দৌরাত্ব

নিজস্ব সংবাদদাতা:

মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষনকারী নিষিদ্ধ পলিথিন ও শপিং ব্যাগকে ‘পূনরায় নিষিদ্ধ’ করে নভেম্বরের শুরু থেকে বাজারে অভিযান চালাচ্ছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। তবে মাসব্যাপী অভিযানেও নূন্যতম কমেনি পলিথিন গডফাদারদের দৌরাত্ব। বর্তমানেও দেশের বিভিন্ন কাচাবাজার, মাছবাজার, মাংসের দোকান, মুদি দোকান- সর্বত্র পলিথিন ব্যাগেই বিক্রি করা হচ্ছে পণ্য। এখনো বন্ধ হয়নি পলিথিনের উৎপাদন কিংবা সরবরাহ।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বছরের ৩ নভেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত পলিথিন শপিং ব্যাগের বিপণন ও ব্যবহার থামাতে ১৬৬টি অভিযান চালানো হয়েছে। এতে ৩৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ৪ টন পলিথিন। আর পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে বছরে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপন্ন হয় প্রায় ৮৭ হাজার টন। অর্থাৎ মাসে ৭ হাজার টনের বেশি, যার মধ্যে পলিথিন ব্যাগের পাশাপাশি ওয়ানটাইম কাপ, গ্লাস, বিস্কুট-চিপসের প্যাকেট ইত্যাদি রয়েছে। আর বছরে মোট প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয় ৮ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টনের বেশি।

গবেষণার তথ্যানুযায়ী, উৎপন্ন প্লাস্টিক বর্জ্যরে ৪০ ভাগ পুনঃব্যবহার হলেও বাকিটা পড়ে থাকে পরিবেশে। আর একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যাগের প্রায় পুরোটাই জায়গা করে নেয় মাটি, ড্রেন, স্যুয়ারেজ, খাল, বিল, নদী ও সমুদ্রে। এগুলো গুঁড়ো হয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিকে রূপান্তরিত হয়ে মিশে যায় খাদ্যচক্রে, যা ক্যান্সারসহ নানা প্রাণঘাতী রোগের জন্ম দেয়।

এদিকে পলিথিনের আগ্রাসন ঠেকাতে অধিকাংশ অভিযান চলেছে বাজারকেন্দ্রিক। হাতে গোনা কয়েকটি কারখানা সিলগালা করা হলেও বিভিন্ন সূত্রমতে দেশে দেড় হাজারের বেশি কারখানায় উৎপাদন হয় পলিথিন ব্যাগ।

পুরান ঢাকার কয়েকটি পলিথিন কারখানার কর্মীরা জানিয়েছে, সরকারের কড়াকড়ির পর এসব কারখানায় দিনের বেলায় অন্যান্য প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন হয়। পলিথিনের শপিং ব্যাগ তৈরি হয় রাতে। রাতেই সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। আর অভিযান চলে দিনে। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে উৎপাদন ধরা পড়ে না। তবে প্লাস্টিক কারখানার এক কর্মী বলেন, প্লাস্টিকের প্রতিটি পণ্য তৈরির ডাইস আলাদা। যারা অভিযান চালান, তারা অভিজ্ঞ হলে কারখানার যন্ত্রপাতি দেখলেই বুঝতে পারবেন সেখানে পলিথিনের শপিং ব্যাগ তৈরি হয় কি না।

সচেতন মহলের দাবী, নিষিদ্ধ পলিথিন মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষন করে আসছে। কিন্তু পলিথিন গডফাদারদের দৌরাত্ব এতো শক্তিশালী যে, সরকারো সেখানে অসহায়। পলিথিন বন্ধে সরকারের পাশাপাশি সাধারন জনগনকেও সচেতন হতে হবে এবং পলিথিন ব্যাবহার বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি পলিথিনের বিকল্প ব্যাবস্থাও নিতে হবে সরকারকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 4 =

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর