বৃহস্পতিবার, আগস্ট ২২, ২০২৪




শুধু না:গঞ্জে ৬টি মামলায় ১৩শ’ ২৭ জন আসামী, বাদ পড়েছেন প্রভাবশালীরা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন:

বৈশম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় শুধুমাত্র নারায়ণগঞ্জ জেলায় গত ৫ দিনে মামলা দায়ের করা হয়েছে ৬টি। ওই মামলাগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কেন্দ্রীয় নেতা সহ শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, গোলাম দস্তগীর গাজী, কায়সার হাসানাত, নজরুল ইসলাম বাবু সহ জেলার অন্তত ১৩ শ ২৭ জনকে আসামী করা হয়েছে। তবে মামলা গুলোতে রহস্যজনক কারনে সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, ফুতল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল সহ প্রভাবশালী নেতাদের নাম দেয়া হয়নি বলে দাবী অনেকের।

আগষ্ট মাসের ১৭ তারিখে প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয় সদর মডেল থানায়। ওই মামলাটিতে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা সহ আরও ১৫০-২০০ জন অজ্ঞাত দেখিয়ে মামলাটি রুজু করা হয়। সেই হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহত আবুল হাসানের বড় ভাই আবুল বাশার। তবে মামলাটিতে রহস্যজনক কারনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ভাজন সাবেক নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর নাম সহ প্রভাবশালী অনেক নেতার নাম দেয়া হয়নি।

গত ১৮ আগষ্ট রোববার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মাছ ব্যাবসায়ী মিলন মিয়া গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে স্ত্রী শাহানাজ। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কেন্দ্রীয় নেতা সহ শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, গোলাম দস্তগীর গাজী, কায়সার হাসানাত, নজরুল ইসলাম বাবু সহ জেলার অন্তত ৬২ জনের নাম উল্লেখ সহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলাটিতেও অনেক প্রভাবশালীর নাম দেয়া হয়নি।

গত ২০ আগষ্ট সোনারগাঁওয়ে পরিবহন শ্রমিক জনি গুলিতে নিহত ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন পিতা ইয়াসিন মিয়া। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কেন্দ্রীয় নেতা সহ শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, গোলাম দস্তগীর গাজী, কায়সার হাসানাত, নজরুল ইসলাম বাবু সহ জেলার অন্তত ১৮৭ জনের নাম উল্লেখ সহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০ জনকে আসামী করে মামলা দেয়া হয়। এই মামলাটিতেও অনেক নেতাকর্মীর নাম দেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এরপর গত ২১ আগষ্ট আবুল হোসেন মিজি নিহত হওয়ার ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মা সাহিদা বেগম। এই মামলাটিতে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কেন্দ্রীয় নেতা সহ শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, আজমেরী ওসমান, অয়ন ওসমান,মীর সোহেল সহ অন্তত ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও অজ্ঞাত নামা ২০০-২৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে। এই মামলালিতে থানার আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল সহ প্রভাবশালী অনেকের নাম দেয়া হয়নি বলে দাবী করেছেন সাধারন মানুষ।

এদিকে গত ২১ আগষ্ট রূপগঞ্জ থানায় আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী রোমান মিয়া গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের খালা রিনা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলাটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে মামলাটি রুজু করা হয়।

অন্যদিকে গত ২১ আগষ্ট জেলার আড়াইহাজার থানায় শফিকুল ইসলাম শফিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তাছলিমা আক্তার বাদি হয়ে মামলা করেন। মামলাটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কেন্দ্রীয় নেতা সহ শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, গোলাম দস্তগীর গাজী, কায়সার হাসানাত, নজরুল ইসলাম বাবু সহ জেলার অন্তত ৪৫ জনের নাম উল্লেখ সহ আরও অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামী করা হয়।

উল্লেখ্য, বৈশম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থী ও শিশু সহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এরপর গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅর্ভুথানে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এসময় গনভবন ঘেরাও দেয়া হলে সেখানে শেখ হাসিনাকে পাওয়া যায়নি। এরইমধ্যে তিনি পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন বলে জানা যায়। এরপর সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ড.মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান করে অন্ত:বর্তিকালীন সরকার গঠন করা হয়। এরপর পাল্টে যায় দৃশ্যপট। গত ১৭ আগষ্ট থেকে শুরু হয় পতন হওয়া শেখ হাসিনা সহ সাবেক মন্ত্রী ও এমপি সহ নেতামর্কীদের বিরুদ্ধে মামলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + 4 =

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর