নিজস্ব সংবাদদাতা:
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের সোনাচড়া এলাকায় একসময়ে চিহ্নিত অপরাধী আকবর ডাকাত ছিলো আতংক। গনপিটুনিতে নিহতের পর তার সন্তান মনির হোসেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিশেষ পেশার একটি কার্ড বানিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে অপরাধ জগত। শুধু তাই নয় মনিরের আপন ভাই হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাই, চুরি, হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি, মাদক ব্যবসায়ী ও দেড় ডজন মামলার আসামি এক ডাকাত সর্দার। পাশাপাশি এই মুখোশধারী মনির হোসেন অপরাধ সাম্রাজ্যে গোপনে চালিয়ে দিতে একে একে ৪ টি বিবাহ করে। এর মধ্যে তার বিশ্বস্ত মাদকের সেলসম্যান মনিরের ছেলে আল-আমিনকে দিয়ে মাদক আনা নেয়া করতো সে। পরবর্তীতে মাদক সহ গ্রেফতার হলে মনির তার স্ত্রী ঝুমাকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে এবং ঝুমাকে দিয়ে মাদক আনা নেয়া সহ ক্রয় বিক্রয় করানোর কাজে ব্যাবহার করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে । এদিকে তার বড় স্ত্রী ছালমাকে দিয়েও মাদক বিক্রি করায় সে। মাদক বিক্রির দায়ে বিগত ৪/৫ বছর আগে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তাকে ধরে নিয়ে যায় । পরবর্তীতে আদালত থেকে সে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসে। এছাড়া তার অপর স্ত্রী ছিনিয়াকে দিয়েও মাদক বিক্রি করারও অভিযোগ রয়েছে। এর প্রায় ৭ বছর আগে ইন্সুরেন্স কর্মী শিরিন নামের (দ্বিতীয় স্ত্রী) মনিরকে তালাক দিয়ে চলে যায়। তার এই পারিবারিক অপরাধ সাম্রাজ্যে অর্থাৎ ডাকাত সর্দার ভাইয়ের, তার স্ত্রীদের ও নিজের বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড বীরদর্পে চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি পত্রিকার ক্যামেরা ম্যানের আইডি কার্ডকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন তার মা চেহারুন নেছা, তার একসময়ের মাদকের সেলসম্যান মনিরের ছেলে আল-আমিন সহ স্থানীয়রা।
আরও জানা গেছে, আকবর ডাকাতের ছেলে ও ডাকাতের ভাই মনির হোসেন মাদক ক্রয় বিক্রি সহ ভাই ও স্ত্রীদের দিয়ে মাদক করিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে। সেই সাথে সোনাচড়া এলাকা সহ আশেপাশের এলাকায় করেছেন বেশ কয়েকটি বাড়ি। এবং বাড়িগুলোর সামনে ও পেছনে লাগিয়েছে সিসি ক্যামেরা। অবৈধ টাকার জোরে নিজেকে অনেক ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী মনে করে। বিশেষ পেশার সাইনবোর্ড ব্যবহার করার কারনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে মনির এখনো সাধু সেজে বসে আছে। তবে এবছরের এপ্রিল মাসের ৭ তারিখ সোনাচড়াবাগ এলাকার সুমি আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা চেষ্টা করায় বন্দর থানার একটি মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী সুমি আক্তার। সেই মামলার ১ নং আসামি মনির হোসেন। একই বাদীকে শ্লীলতাহানি ও কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। পাশাপাশি বন্দর থানা পুলিশের হাতে ও সে গ্রেফতার হয়েছিলো মনির। পরে রহস্যজনক কারণে সে ছাড়া পায় বলেও জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সূত্র।
এ বিষয়ে তার জন্মদাত্রী মা চেহারুন নেছা জানায়, মনির হোসেন আমার ছেলে। সে ও তার স্ত্রী মাদক বিক্রি করে ৪ টা বাড়ী করেছে। তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
তার একসময়ের মাদকের সেলসম্যান মনিরের ছেলে আল-আমিন জানায়, মনির আমাকে দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মাদক বিক্রি করায়। এরপর আমাকে পুলিশে মাদক সহ গ্রেফতার করলে সে আমার স্ত্রী ঝুমাকে বিয়ে করে এবং তাকে দিয়ে মাদক বিক্রি করায়। আমি মনিরের শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনির হোসেন জানায়, আমি মাদকের সাথে জড়িত না। তবে আল-আমিনের স্ত্রীকে বিয়ে করার কথা তিনি স্বীকার করেন।
স্থানীয়রা জানান, মনির খুবই চতুর একজন মানুষ। সে সবসময়ই ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে স্ত্রীদের দিয়ে মাদক ব্যবসা করায় ও নিজে করে। তাকে ধরে তার মুখোশ উন্মোচন করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, এভাবে কেউ যদি বিশেষ পেশার সাইনবোর্ড লাগিয়ে মাদক বিক্রি সহ অপরাধ করে সেটা খুবই দুঃখজনক। তবে তার বিষয়টি প্রশাসন লেবেলে অনেকেই অবগত আছেন। মাদক সহ তাকে পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply