নিয়াজ মোর্শেদ, পটুয়াখালীঃ
কাঙ্খিত ইলিশ না মেলায় অলস সময়পাড় করছে পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। জেলার বিভিন্ন নদীতে ২মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের জালে ধরা পরছেনা কাঙ্খিত পরিমাণ ইলিশ।যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তা বিক্রি করে তেল খরচ বহন করাই দায়। একারণে চরম হতাশায় রয়েছেন এ এলাকার হাজার হাজার জেলে পরিবার। দাদনেআনা ঋণের টাকা পরিশোধ ও সংসারের ব্যয়ভার বহন নিয়ে চিন্তিত তারা।জেলেদের দাবী নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তারা মাছ শিকারে বিরত থাকলেও একটিস্বার্থন্বেষী জেলেদল(বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারেরজেলেরা) বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার করেছেন। যার কারণে এখন সাগরেকাঙ্খিত পরিমাণ ইলিশের দেখা মিলছেনা। জানাগেছে, ইলিশের নিরাপদপ্রজননের লক্ষ্যে গত মার্চ এবং এপ্রিল মাসে জেলার তেতুলিয়া,আন্ধারমানিকসহ বিভিন্ন নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা ও বাজারজাত করারওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও সাগরে ছিলো না কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা।যারকারণে জেলেদের অবাদ বিচরণ ছিলো সাগরে।তেতুলিয়া পাড়ের জেলেরা টানা২ মাসের নিষেধাজ্ঞার পরে অনেক বেশি মাছ পাওয়ার আশায় দলে দলে সাগরেগেলেও কাঙ্খিত ইলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছেনা। যাও বা পাওয়া যাচ্ছে, তাবিক্রি করে তেল খরচ বহন করাই দায়।অপরদিকে সাগরে চলতি মাসের ২০তারিখ থেকে জুন পর্যন্ত মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাহয়েছে,যার কারণে চিন্তিত সাগর ও গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করাজেলেরা। জেলার মহিপুর,আলীপুর মৎস্য বন্দর,রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজজেলে পল্লী এবং দশমিনার আউলিয়াপুর, গোলখালি জেলে পল্লীতে গিয়েদেখা যায়, শত শত মাছ ধরার ট্রলার ঘাটে নোঙ্গর করা। জেলেরা কেউ ট্রলারেবসে, আবার কেউবা ভেরিবাঁধের পারে বসে ছেঁড়া জাল সেলাই ও নতুন জালগোছিয়ে রেখেছেন এবং মাছ ধরার ট্রলার মেরামতে অলস সময় পাড় করছেন।এসময় জানতে চাইলে জেলেরা জানান, ইলিশ না পাওয়ায় অনেক ট্রলারসমুদ্র থেকে ফিরে এসেছে। তাই সাগরে না গিয়ে ঘাটে নোঙর করেআছেন তারা। মহিপুর-আলিপুর মৎস্য বন্দরের জেলে ফিরোজ মিয়াজানান,তেতুলিয়া নদীতে অবরোধ ছিল কিন্তু সাগরে অবরোধ না থাকলেওতেমন মাছের দেখা মিলছেনা।এখন ২০ তারিখ থেকে আবার অবরোধ হওয়াতেআমরা খুব চিন্তায় আছি। এক সপ্তাহ সাগরে থাকতে যে পরিমাণ খরচ হয়,তার অর্ধেক পরিমাণ মাছ পাওয়া যায় না।মাছ বিক্রি করে তা উঠেনা। রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ এলাকার জেলে খলিল মুন্সীজানান,আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে, তবুও সাগরে মাছ নেই। গত সপ্তাহেজাল ট্রলার নিয়ে সাগরে গেছি। তেল ও খাবার কেনার জন্য ১৮ হাজার টাকাব্যায় হয়েছে। কিন্তু মাছ বিক্রি করে পাইছি মাত্র ৯ হাজার টাকার। এতটাকা ঘাটতি হলে ঋণের বোঝা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। এ জন্য সাগরথেকে ফিরে আসার পর এইবার আর যাই নাই। মাছ পরা শুরু করলে আবার যাব।পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্তকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন,’ইলিশশিকারের মৌসুম এখনো শুরু না হওয়ায় কিছুটা কম ইলিশ পাচ্ছেজেলেরা,তবে সামনে ইলিশের মৌসুমে কাঙ্খিত ইলিশ মিলবে জেলেদেরজালে।’বিগত ২ মাস বিভিন্ন নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সাগরেছিলোনা, চলতি মাসের ২০ তারিখ থেকে জুন পর্যন্ত সাগরে নিষেধাজ্ঞায়ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির পাবে বলেও মনে করেন তিনি।
Leave a Reply