শনিবার, আগস্ট ২১, ২০২১




রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন পরীমনি

নারায়াণগঞ্জ প্রতিদিনঃ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তৃতীয় দফা রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।

শনিবার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টা ৪৯ মিনিটে তৃতীয় দফায় একদিনের রিমান্ড শেষে পরীমনিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাকে জেল হাজতে আটক রাখার আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল।ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালতে এ বিষয় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘আসামি পরীমনি মামলার বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন। তার দেওয়া প্রদত্ত তথ্য-উপাত্ত তদন্তের স্বার্থে যাচাই করে বাছাই হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলার তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন। তাকে জামিন দিলে মুক্তি পেলে সে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ১৩ আগস্ট ছয় দিনের রিমান্ড শেষে পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা।

এসময় আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পরীমনিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত ৫ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগীকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মামলায় তাদের প্রথম দফায় চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ রিমান্ড শেষে ১০ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুর দ্বিতীয় দফায় দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৪ আগস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। অভিযানে ভয়াবহ মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয়। পরীমনির ড্রয়িংরুমের কাভার্ড, শোকেস এবং ডাইনিংরুম, বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়।

এরপর রাত ৮টা ১০ মিনিটে পরীমনিকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে র‌্যাব সদর-দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ১২টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। পরদিন ৫ আগস্ট বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে পরীমনি, চলচ্চিত্র প্রযোজক রাজ ও তাদের দুই সহযোগীকে কালো একটি মাইক্রোবাসে করে বনানী থানার উদ্দেশে রওনা দেয় র‌্যাবের টিম।

এরপর র‌্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদক সেবন করতেন। এমনকি এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন তিনি। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করেন। তিনি বাসায় নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।

পরীমনি ২০১৪ সালে সিনেমা জগতে আসেন। এ পর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও পাঁচ-সাতটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। প্রযোজক রাজ তাকে পিরোজপুর থেকে ঢাকায় সিনেমা জগতে নিয়ে আসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 1 =

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর