নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন:
যশোরের কেশবপুর পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থী এক বিএনপি নেতা।তবে ভুক্তভোগী নারী এ বিষয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) কেশবপুর পৌরসভা মেয়রের দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন। ওই আবেদনপত্রে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনেরও অভিযোগ তুলেছেন।স্থানীয়রা জানান, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত কেশবপুর পৌরসভা নির্বাচনে ১নং ভোগতি নরেন্দ্রপুর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন সোহেল হাসান আইদ। তিনি পানির বোতল প্রতীকে নির্বাচন করেন। মাত্র ৩৮ ভোট পেয়ে জামানতও হারিয়েছেন। ওই নির্বাচনে তার জন্য কাজ না করার জন্য এবং আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলামের পক্ষে কাজ করা ও নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার অভিযোগে স্ত্রী জামিলা পারভীনকে গত ২ মার্চ তিনি তালাক দিয়েছেন।
সোহেল হাসান আইদ গণমাধ্যমকে বলেন, জামিলা নৌকায় ভোট দিয়েছে কি দেয়নি সেটা বিষয় না। সে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী আতিয়ার রহমানের উট পাখি মার্কার নির্বাচনী প্রচারণা করেছে।আমার সামনে অন্যের নির্বাচন করা, স্বামী হিসেবে মর্যাদাহানী ও অপমানকর মনে হওয়ায় তাকে তালাক দিয়েছি। এ ছাড়াও সন্ত্রাসীদের দিয়ে একাধিকবার সে আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছে। যার প্রমাণ হাতে পাওয়ায় গত ২ মার্চ তালাক দেয়ার পর ১৫ মার্চ জামিলাসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।সন্তানরা বড় হওয়ার পরও কেউ কম কষ্টে বউকে তালাক দেয় না, সেটা আপনাদেরকে বুঝতে হবে।
গৃহবধূ জামিলা পারভীন গণমাধ্যমকে বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা প্রেম করে তারপর বিয়ে করেন। আমাদের একটি ছেলে (সোয়েমারজু অংশু এবার এইচএসসি পাশ করেছে) ও একটি মেয়ে (নাফিসা লুবনা অহনা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে) রয়েছে।শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিরামহীনভাবে স্বামীর নির্বাচনে কাজ করতে পারিনি। তারপরও গণসংযোগে যেয়ে আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জন্য কাজ করছি, অভিযোগ তুলে আমার স্বামী তার দুই ভাইপো আলম ও পলাশকে সাথে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ছেলে মেয়ের সামনে আমাকে মারধর করে এবং সন্তানদেরসহ আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে নিরাপত্তা চেয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করি (যার নং- ১০৪১)। অথচ মনিরামপুর পৌর নিকাহ রেজিষ্টারের মাধ্যমে আইদ আমাকে তালাক দিয়ে ডাকযোগে পাঠিয়েছে।
জামিলা আরও জানান, তার স্বামী বিএনপির কর্মী হিসেবে অসংখ্যবার হামলা, মামলা ও কারাবাস করায় মানসিক দিক দিয়ে সব সময় উগ্র মেজাজের হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তার ও তার সন্তানদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। তার বিরুদ্ধে কেশবপুর থানার অস্ত্র, বিস্ফোরক ও নাশকতার চারটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি পারিবারিক ও খুবই অমানবিক। স্বামীর কাছে ওই গৃহবধূ দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার শুনেছি। এখন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দু’পক্ষকে নোটিশ করে ডেকে শুনানী গ্রহণ করে পারিবারিক আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply