রূপগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজীপুর-চট্টগ্রাম এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের ভূলতা ফ্লাইওভারের পাশে রাখা হচ্ছে ময়লার ভাগাড়। ফেলা হচ্ছে গাউছিয়া কাঁচাবাজার, তাঁতবাজার, হাজী আব্দুল হক সুপার মাকেটের কলার আড়ৎ, খাবার রেষ্টুরেন্ট, মুরগির দোকান, মাছের আড়ৎ ও ফুটপাতের কাঁচাবাজারের ময়লাসহ বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়ির ময়লা। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ। এই উৎকট দুর্গন্ধে বমি আসার উপক্রম হওয়ায় নাক চেপে চলাচল করছে পথচারীরা। প্রতিদিন এখানে ফেলা হচ্ছে শত শত টন ময়লা-আবর্জনা। এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের পাশে দিন দিন ময়লার স্তুপ দীর্ঘ হচ্ছে। এ এলাকায় বর্জ্য ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এলাকাজুড়েই ময়লা-আবর্জনা। সর্বত্রই পরিচ্ছন্নতার অভাব। ময়লা-আবর্জনা থেকে এলাকায় জীবাণু ছড়াচ্ছে। এতে জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া ও বিভিন্ন প্রজাতির মশা-মাছিসহ পোকামাকড়। এছাড়াও ময়লার স্তূপের কারণে সৌন্দর্য হারাচ্ছে দিন দিন। ৩৫৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪লেন বিশিষ্ট তৃতীয় তলা ভূলতা ফ্লাইওভারটির সৌন্দর্য হারিয়ে যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটি দিনের পর দিন এমন বিশ্রী ও বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্টরা এসব বর্জ্য অপসারণে কোনো ভূমিকাই রাখছে না এমন অভিযোগ পথচারীদের। এ এলাকার মার্কেট ব্যবসায়ীরা বলেন, গোলাকান্দাইলের এই স্ট্যান্ডটি যেন ময়লা-আবর্জনার ডাসবিন। এলাকাবাসী বলেন, রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল বাস স্ট্যান্ডে বিভিন্ন এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে ব্যবসায়ী, পথচারী ও এলাকাবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। ময়লা-আবর্জনার কারণে এসব এলাকার মানুষ বেশি রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে মনে করেন সচেতন মহল। অন্যদিকে পরিবেশও মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের ভূলতা ফ্লাইওভার ঘেঁষে বর্জ্যরে স্তূপ গড়ে উঠেছে। পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল, কার্টুন, কর্কশিট, কাগজ, পলিথিন, বস্তা, মুরগী ও কশাইখানার বর্জ্য, ক্লিনিক্যাল বর্জ্য, উচ্ছিষ্ট খাবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে স্তূপাকারে রয়েছে। এসব আবর্জনার দূর্গন্ধে বমি আসার উপক্রম হওয়ায় নাকে হাত চেপে চলছে যানবাহনের চালক, যাত্রীসহ পথচারীরা। এছাড়াও এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সৌন্দর্যও বিনষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য এলাকাবাসীর। এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের উপর ময়লার স্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে এ বিষয়ে কিছু বক্তব্য নেওয়ার জন্য অনেক লোককে বললেও কেউ দাঁড়াতেই রাজি হয়নি। অনেক চেষ্টার পর মোস্তফা (৫৫) নামের এক রিকশা চালককে কিছু জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ভাই আপনি তো যাই হোক আসছেন, অন্যরাতো আসেই না। আমি আর কি বলব? দেখতেই তো পারছেন, আপনি নিজেই তো দুর্গন্ধে দাঁড়াতে পারছেন না। সাংবাদিক আর প্রশাসন যদি ভালো মতো কাজ করতো তাহলে এখানে এভাবে ময়লার ভাগাড় হতে পারতো না। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বিআরটিসি বাসযোগে আসা আমীর হোসেন বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা এই এলাকার একটি বড় সমস্যা। খোলা স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি এই এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদেরও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। এনামুল হোসেন নামে এক প্রাইভেটকার চালক জানান, গুরুত্বপূর্ণ এই এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের উপর ময়লা-আবর্জনা ফেলে এমন নোংরা একটি অবস্থা তৈরি করা হয়েছে, এটি কোনোভাবেই সহনীয় নয়। দুর্গন্ধের কারণে নাকে-মুখে রুমাল দিয়েও চলাচল করা অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল আল-মামুন বলেন, এই বিষয়টি আমাদের না, তবুও বলছি এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের উপর ময়লা ফালানো ঠিক না। কেউ যদি এভাবে ময়লা রাস্তার উপর ফেলে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার মনে করছি। গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি হাসপাতালে ভর্তি আছি তবে বিষয়টি দেখবো। যেন এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের উপর ময়লা ফেলাতে না পারে। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই তবে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।
Leave a Reply