সোমবার, অক্টোবর ৫, ২০২০




ফতুল্লায় কাশীপুরে এক লম্পটের নাম নিজাম মুন্সী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিনি নিউজ :  
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশীপুর এলাকার নিজাম মুন্সী কতগুলো বিয়ে করেছেন তার কোন হিসাব তার কাছেই নেই। মেয়ে দেখলেই তার পছন্দ হয়। জিভে আসে জল। বয়স বা বংশ পরিচয় তার কাছে কোন বিষয় নয়, মেয়ে হলেই হলো। মেয়ের বয়সী বা নাতনির বয়সি মেয়েকে বিয়ে করতে তার কোন আইলসামী নেই। এ পর্যন্ত হিসেব মতে বিয়ে করেছেন ১৮ থেকে ১৯টি। এর মধ্যে এক মায়ের পেটের দুই বোনও রয়েছে এ তালিকায়।
জানা গেছে, ষাট বছর বয়সি নিজাম মুন্সী। বসবাস করেন কাশীপুরের চৌধুরীগাও এলাকার। ওই এলাকার নুর ইসলামের ছেলে নিজাম। পেশায় তিনি গার্মেন্টে কন্ট্রাকটারি করেন। এই লম্পট প্রথম বিয়ে করেন প্রায় ৩৫ বছর পূর্বে। প্রথম স্ত্রীর ছিল রুমি বেগম। তার দু:চরিত্রের কারনে তাকে ফেলে চলে যায় রুমি। এরপর যাকে বিয়ে করে নাম ঝুনু বেগম (৪৫)। ঝুনু বেগমের ঘরে এক ছেলে এবং এক মেয়ে। দুজনেরই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। এরপর লম্পট নিজাম মুন্সীর নজর পড়ে বন্দর এলাকার আসমার উপর। তাকেরও বিবাহ করে। তার ঘরেও এক ছেলে এবং এক মেয়ে। দ্বীতিয় বউয়ের সংষারের দুই সন্তানেরও বিবাহ সম্পন্ন্ হয়েছে। নিজামের হাত থেকে ছাড় পায়নি গার্মেন্টসকর্মী সানোয়ারাও। তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলে সানোয়াকে। এ ঘরে প্রতিবন্ধী এক ছেলে রয়েছে। এরপর ৪র্থ বারের মত বিয়ে করে বেবী নামের এক নারীকে। এ ঘরেও জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান। সেই মেয়েরও বিয়ে দেয়া হয়। ৫ নাম্বারে থাকা পারভিনকেও বিয়ে করে নিজাম মুন্সী। তার ঘরেও একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে। এরপর বিয়ে করা হয় ময়না নামের এক মহিলাকে। তবে ময়নার ঘরে কোন সন্তান জন্মগ্রহন করেনি। নিজাম মুন্সী চরিত্রহীন লম্পট হওয়ায় তাকে ফেলে চলে যায় ময়না। এরপর তার ৭ম বারের মত লালশার শিকার হয় আসমা নামের ১৩ বছরের এক নাবালিকা মেয়ে। আসমার বাবা-মাকে ফুসলিয়ে তাকে বিয়ে করে। এরপর এ সংষারে জন্ম নেয় দুই মেয়ে এক ছেলে। এর মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে দেয়া হয় এবং এক ছেলে ও মেয়ে নিজাম মুন্সী জোরপূর্বক তার কাছে রেখে দেয়। তবে তাকে রেখে ৮ম বারের মত অন্য এক লোকের স্ত্রী হনুফা নামের আরও এক মহিলাকে বিয়ে করে লম্পট নিজাম মুন্সী। হনুফাও বেশী দিন টিকেনি তার কাছে। কেন না বিয়ের বিষয়টি জানা জানি হয়ে গেলে সম্পর্কটা শেষ হয়ে যায়। এরপর ৭নং স্ত্রীর আপন ছোট বোন নাজম কে জোরপূর্বক ধর্ষণ এবং বিয়ে করে। যদিও এ ঘরে কোন সন্তান হয়নি। প্রায়ই এই স্ত্রীকে রেখে পতিতা নিয়ে ফুর্তি করে নিজাম মুন্সী। এরকম অনেক অভিযোগ থাকার পরে। গোপন নজর রাখে তার স্ত্রী নাজমা। ভোলাইল মিষ্টির দোকানের সামনে এক সাথে তিন মেয়ে সহ হাতে নাতে ধরা পরে নিজাম মুন্সী। শুধু তাই নয় গত একদিন শিলা নামের এক মেয়ে হাতে নাতে ধরে নাজমা। এরপ তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে নাজমাকে মারধর সহ বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর থেকে স্ত্রী নাজমা নিখোজ রয়েছে। শুধু তাই নয় এরপ একে একে লাকি-নুসরাত-আদরী নামের আরও প্রায় হাফ ডজন নারীকে বিভিন্ন প্রলোপভনে বিয়ে করে সে। এরপর স্বার্থ উদ্ধার করার পর ছেড়ে দেয় লম্পট নিজাম মুন্সী।
এলাকাবাসী জানায়, বিয়ে করা তার একটা বাজে স্বভাব। এতোগুলো বউ থাকার পরও তার নারীদেও প্রতি কোন প্রকার লালশা কমেনি। অন্য নারীদের নিয়ে ফূর্তি করার সময় হাতে নাতেও আটক হয়েছে বেশ কয়েকবার। তার এনরকম চরিত্রহীনতার কারনে মসজিদে নামাজ পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এরপর তার স্বভাব চরীত্র ভাল হলো না না।
নাজমার বড় বোন আসমা জানায়, আমি তার স্ত্রী থাকাবস্থায় সে আমার ছোট বোন নাজমাকে জোরপূর্বক বিয়ে করে। আমিতো নিজামের মত লম্পট না। সেই কারনে লজ্জায় ওর কাছ থেকে আমি তিন সন্তান রেখে চলে আসি।
বাড়ি থেকে মারধর করা স্ত্রী নাজমা জানায়, আমি গত শনিবার জানতে পারি নিজাম মুন্সী এক মেয়ে নিয়ে খারাপ কাজ করছে। আমি গিয়ে হাতে নাতে ধরে ফেলি। এরপর আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের দেয়। এবং হত্যার হুমকি দেয়। আমি এখন পালিয়ে বেরাচ্ছি। ও আমার বড় বোন কে বিয়ে করে। এরপর আমাকে জোরপূর্বক বিয়ে করে। শুধু তাই নয় আমার ছোট বোনকে সে নষ্ট করতে চেয়েছিল। আমি লম্পট নিজাে মর বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নিজাম মুন্সী জানান, বর্তমানে আমার তিনটি বউ রয়েছে। বাকিগুলো অভাবের তারনায় চলে গেছে। বাকি সব অভিযোগ নিজাম মুন্সী অস্বীকার করেন।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আসলাম হোসেন বলেন, নিজাম মুন্সীরা বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া নিজাম মুন্সী জামায়াত নেতা এবং তার বিরুদ্ধে রয়েছে মামলা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, মামলাগুলো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight + 10 =

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর